টমেটোর এনথ্রাকনোজ একটি ছত্রাকজনিত রোগ যা ফলকে পচিয়ে দেয়। এই ব্লগে রয়েছে রোগের লক্ষণ, কারণ ও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য।

রোগের কারণ: Colletotrichum cocodes নামক ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে।
রোগের লক্ষণ:
- শুরুতে ফলের উপর একটু দাবানো ছোট ও ছোট গোলাকার পানি ভেজা দাগের সৃষ্টি হয়।
- দ্রুত দাগ গুলো গাঢ় রং ধার করে এবং দাগ আরও একটু ভিতরের দিকে বসে যায়।
- ফলের গায়ে অসংখ্য কালো দাগ দেখা যায় এবং দাগে চক্রাকার বৃত্তের ছাপ পড়ে।
- আর্দ্র আবহাওয়ায় দাগে স্পোর জন্মে এবং পরবর্তীতে দাগের মাঝখানে ফোটা ফোটা কালো দাগে ভরে যায়।
- উষ্ণ আবহাওয়ায় ছত্রাক দাগের নীচের দিকে ছড়িয়ে পড়ে আর তার ফলে ফল পচে যায়।
- কাঁচা ও পাকা উভয় ফলে ছত্রাক আক্রমণ হতে পারে। কাঁচা ফলে ছত্রাক আক্রমণ হলেও ফল না পাকা পর্যন্ত ছত্রাক আক্রমণের কোন লক্ষণ দেখা যায় না।
- পাকা ফলে ছত্রাক আক্রমণের ৫-৬ দিনের মধ্যে দাগ গুলো দেখা যায়।
রোগের উৎপত্তি:
এ ছত্রাক ফসলের পরিত্যাক্ত অংশে বেচে থাকে এবং ঐ স্থান হতে রোগের প্রাথমিক আক্রমণ শুরু হয়। ছত্রাক অক্ষত ফলের মধ্যে প্রবেশ করে এবং উষ্ণ আর্দ্র আবহাওয়ায় দ্রুত বৃদ্ধি পায়। জমিতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা না থাকলে এ রোগের প্রকোপ বেশী হয়।

দমন ব্যবস্থা:
- সুস্থ জমি থেকে বীজ সংগ্রহ ও সুস্থ্য চারা রোপণ করতে হবে।
- ফলের পরিত্যাক্ত অংশ পুড়িয়ে বা মাটিতে পুতে ধ্বংস করতে হবে।
- জমি হতে পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা করতে হবে।
- একই জমিতে বারবার টমেটো ফসল ও একই পরিবারের ফসল (সোলানেসি) আবাদ না করা।
- বীজ রোপণের পূর্বে প্রতি কেজি বীজের জন্য ২.৫ গ্রাম হারে কার্বেন্ডাজিম/প্রোভ্যাক্স দিয়ে বীজ শোধন করে নিতে হবে।
- জমি হতে আগাছা তুলে ফেলা বিশেষ করে সোলানেসী গোত্রের আগাছ ধ্বংস করে ফেলতে হবে।
- অ্যাজোক্সিট্রোবিন (২০%)+সাইপ্রোকোনাজোল (৮%) ১মিলি প্রতি লিটার পানিতে অথবা কপার হাইড্রোক্সাইড ২গ্রাম প্রতি লিটার পানিতে মিশিয়ে স্প্রে করতে হবে।